খুলনার পাইকগাছায় অবৈধভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির ব্যবসা চলছে সমান তালে। এতে একদিকে বন উজাড় হচ্ছে, অন্যদিকে পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
প্রশাসনের নজরদারি থাকলেও প্রভাবশালী চুল্লি মালিকরা নানা কৌশলে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, পাইকগাছা–কয়রা উপজেলার চাঁদখালী বাজার সংলগ্ন এলাকায় অসংখ্য কয়লার চুল্লি স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিদিন শত শত মন কাঠ পোড়ানো হয় এসব চুল্লিতে। ধোঁয়ায় ভরে যাচ্ছে আকাশ, শ্বাসকষ্টসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে স্থানীয় মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিমাসে প্রতিটি চুল্লিতে প্রায় এক লাখ মন কাঠ পোড়ানো হয়। বছরের পর বছর নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের কারণে বনজসম্পদ ধ্বংস হচ্ছে, জীববৈচিত্র্য ও বন্যপ্রাণী হুমকির মুখে পড়ছে। বিষাক্ত ধোঁয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট, চোখ জ্বালা, ত্বকের সমস্যা বেড়েছে।
সচেতন মহল বলছে, পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকাতে অবৈধ কয়লার চুল্লি স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় জলবায়ু পরিবর্তন, ভূমিধস, খরা, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকি আরও বাড়বে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে প্রশাসনের অভিযানে পাইকগাছায় কয়েকটি চুল্লি ভেঙে ফেলা হয়েছিল। তবে কিছুদিন পরই আবার চালু হয়ে যায় সেগুলো। স্থানীয়দের অভিযোগ, চুল্লি মালিকরা সমিতি গঠন করে মাসিক চাঁদার মাধ্যমে প্রভাবশালী মহলকে ম্যানেজ করেন। ফলে প্রশাসনও স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবী এফএমএ রাজ্জাক বলেন, “প্রশাসন কেবল জরিমানা করছে, কিন্তু স্থায়ীভাবে চুল্লি বন্ধ না করলে পরিবেশ বিপর্যয় আরও ভয়াবহ হবে।”
চাঁদখালী ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আব্দুল্লাহ সরদার স্বীকার করেছেন, কয়লার চুল্লি পরিবেশ ও বায়ুদূষণের বড় কারণ। তিনি বলেন, অভিযোগ পেলে প্রশাসনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে খুলনা বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মমতাজ বেগম জানিয়েছেন, স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।








