পাইকারি বাজারে শিমের কেজি ৪০ টাকা হলেও খুচরা বাজারে সেই শিমের দাম দাঁড়িয়েছে ৬০ টাকায়। মৌসুমের এই সময়েও শিমের এমন উচ্চ মূল্যে সাধারণ জনগণ দিশেহারা। তবে চলমান এই উচ্চ মূল্য সত্ত্বেও লোকসানের চিন্তায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন ঈশ্বরদীর শিম চাষীরা।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ঈশ্বরদীতে শিম চাষের মোট লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১২৯০ হেক্টর জমিতে এর মধ্যে আগাম শিম হিসেবে ইতোমধ্যে ৯১০ হেক্টর জমিতে চাষ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৩৮০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শিম চাষ হবে। কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ অঞ্চলের কৃষকরা এবছর আগাম জাতের শিম চাষ করে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
উপজেলার শিম প্রধান এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, শিম ও শিমের ফুল শূন্য মাচানে কাজ করছেন কৃষক ও কৃষাণীরা। শিম চাষীরা জানান, নিয়মিত রুটিন করে লতা ছাড়ানো, শুকিয়ে যাওয়া ফুল পরিষ্কার করা এবং ছত্রাকনাশক, ভিটামিন ও পচন রোধে স্প্রে করতে হয়। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় খরচের চেয়ে ফলন কম থাকায় লোকসানে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
ঢুলটি এলাকার শিম চাষী সাইদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, স্থানীয় কীটনাশক ব্যবসায়ীদের মানহীন কীটনাশক বিক্রির ফলে তাঁরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কারণ এসব নিম্নমানের বালাইনাশক ফসলের কোনো উপকারে আসছে না। রেজওয়ান নগর এলাকার চাষী মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এবার ভরা মৌসুমেও দাম কমার সাথে সাথে উৎপাদন না বাড়ায় লোকসানের চিন্তায় কৃষকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। রামনাথপুরের চাষী ইমরান হোসেন জানান, কিছু বালাইনাশক ব্যবহার করে তাদের গাছের ফুল ও শিমের কড়ি ঝরে পড়ছে, এতে ফলন কমার শতভাগ সম্ভাবনা রয়েছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মমিন বলেন, বর্তমানে দেশে প্রায় ৭ থেকে ৮ শত বৈধ কীটনাশক কোম্পানি রয়েছে। কোম্পানিগুলো যেন মানহীন পণ্য উৎপাদন না করে, সে জন্য নিয়মিত তাদের পণ্যের গুণগত মান যাচাই করতে ল্যাবে প্রেরণ করা হয়। তিনি কৃষকদের ভালো কোম্পানি খুঁজে সেই পণ্যগুলো ব্যবহার করার নির্দেশ দেন।
তিনি আরও বলেন, এবছর আগাম শিম উৎপাদনকারীরা বিঘা প্রতি প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকার মুনাফা অর্জন করেছে। তবে ক্ষতি এড়াতে কৃষকদের শিমের ভালো ফলন পেতে নিয়মিত গুণগত মানসম্পন্ন বালাইনাশক স্প্রে করতে হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
সূত্র :যায়যায় দিন








