বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন গত সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আর যেখানে অংশগ্রহণ করেননি তামিম ইকবালসহ ঢাকার বেশ কিছু সংগঠক। বিসিবি নির্বাচন শেষে আবারও সরব হলেন তামিম। আজ বুধবার (৮ অক্টোবর) নির্বাচন বয়কট করা ক্লাবগুলোর হয়ে সংবাদ সম্মেলনে হাজির ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।
নির্বাচনের ঠিক এক দিন আগে গত শনিবার ক্লাব নির্বাচন পেছানোসহ ৩টি শর্ত জানিয়েছিলেন সংগঠকরা। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছেও স্মারকলিপি গিয়েছিল তাদের পক্ষ থেকে। দাবি উঠেছিল– বিসিবি’র বর্তমান (বিগত) নির্বাহী পর্ষদের সময় বাড়িয়ে নির্বাচনের পুনঃতফসিল, বিকল্প হিসেবে অ্যাডহক কমিটির কাছে দায়িত্ব দেওয়া ও পুনঃনির্ধারিত সময়ে নতুন নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে ভোটগ্রহণ করা।
তবে তাদের এই হুমকি পাত্তা না দিয়ে গেল ৬ অক্টোবর নির্বাচন হয়। সেখানে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তারই প্রতিবাদ হিসেবে আজ ঘরোয়া ক্রিকেটের বয়কটের ডাক দিয়েছেন সংগঠকরা। বিদ্রোহী ক্লাবগুলোর পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেন মোহামেডান ক্লাবের কাউন্সিলর মাসুদুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা একই কথা বলতে বলতে ক্লান্ত। আমাদের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হয়েছে ৬ তারিখের বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে। এই বয়সে আমরা বহু সরকার দেখেছি, বিতর্কিত নির্বাচন দেখেছি, রাতের ভোট এবং দিনে কারচুপি দেখেছি। সব কিছুকে ছাপিয়ে সবার সামনেই এবারের (বিসিবি নির্বাচনে) ভোট হলো। আমরা সুষ্ঠু ভোট চেয়েছিলাম। আমাদের কথা যেহেতু তাদের কানে পৌঁছায়নি, সেজন্য আমরা আসন্ন সব প্রতিযোগিতা বর্জন করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ থেকে ক্রিকেট সৌন্দর্য হারিয়েছে। আপনারা যদি এভাবে চলতে চান আমরা ক্রিকেট খেলব না। একই বিষয় জেলা ক্রিকেটের ক্ষেত্রেও। এখানে জেলা প্রতিনিধি আছেন রেদওয়ান ভাই। আমরা জেলা পর্যায় থেকেও ক্রিকেট বর্জন করব এবং আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। আপনারা যারা ক্লাব প্রতিনিধি আছেন কাউকে যদি হুমকি দেওয়া হয়, ষড়যন্ত্রের ফাঁদে ফেলা হয় তবুও আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। আপাতত ক্রিকেট বন্ধ থাকবে। আমরা ঘোষণা দিচ্ছি।’
পরিচালক নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন জানিয়ে তামিম আরও বলেন, ‘আমি আপনাকে এতটুকু গ্যারান্টি দিয়ে বললাম, আমি যদি ব্যক্তিগতভাবে দাঁড়াতাম, আমার পক্ষে কোন টিম আছে, বিপক্ষে কোন টিম আছে…তারপরও আমি সহজেই পাস করতাম। এটা নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ ছিল না। কারণ, আমি এটা বিশ্বাস করি, আমরা সবাই ক্রিকেটের স্বার্থে আছি।’ এ সময় বিসিবি নির্বাচন নিয়েও নানা অভিযোগের কথা জানান তামিম। ই-ব্যালটে বেশির ভাগ ভোট পড়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি, ‘আপনি ই-ভোটিং করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কেন্দ্রে আছেন। তাহলে ই-ভোটিং করার দরকার কি?’
নির্বাচনের আগেই লিগ বর্জনের হুমকি দিয়ে রেখেছিল নির্বাচনে অংশ না নেওয়া ক্লাব অর্গানাইজার অ্যাসোসিয়েশনের একটি পক্ষ। এবার তারা জে-া–বিভাগেও ক্রিকেট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। মঙ্গলবার ( ৭ অক্টোবর) বিসিবি সভাপতি হওয়ার পর আমিনুল ইসলাম বুলবুল যদিও বলেছেন আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সুরাহা করবেন তারা।
তবে বুলবুলের আলোচনার প্রস্তাবকে প্রত্যাখান করে আজ বুধবার (৮ অক্টোবর) আবার এই ঘোষণা দেওয়া হলো। ক্রিকেট বর্জন করলে তা ক্রিকেটারদের আর্থিক সংকটে ফেলবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তামিম বলেন, ‘এটা যারা নির্বাচন করেছে তাদের আগে যথেষ্ট চিন্তা করা উচিত ছিল।’
সূত্র:যায়যায় দিন








