এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন মার্কিন বিজ্ঞানী জন ক্লার্ক, মিশেল এইচ. দেভোরে এবং জন এম. মার্টিনিস। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় বিকাল পৌনে ৪টায় সুইডেনের স্টকহোম থেকে দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস এ পুরস্কারের বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে।
সংস্থাটি জানিয়েছে, বৈদ্যুতিক সার্কিটে ‘ম্যাক্রোস্কোপিক কোয়ান্টাম মেকানিক্যাল টানেলিং’ এবং ‘এনার্জি কোয়ান্টাইজেশন’ বিষয়ক যুগান্তকারী আবিষ্কারের জন্য তাদের এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
পদার্থবিজ্ঞানের একটি মৌলিক প্রশ্ন হলো- কোনো সিস্টেম কত বড় হতে পারে যেখানে কোয়ান্টাম মেকানিক্সের প্রভাব কার্যকর থাকবে? এ বছরের নোবেল বিজয়ীরা এমন একটি বৈদ্যুতিক বর্তনী নিয়ে পরীক্ষা চালান, যা হাতে ধরে রাখা সম্ভব। তারা প্রমাণ করেন, এই সার্কিটে কোয়ান্টাম টানেলিং এবং শক্তির স্তর বিভাজনের মতো জটিল কোয়ান্টাম বৈশিষ্ট্য কার্যকর হতে পারে।
সাধারণত প্রচুর কণা একসঙ্গে থাকলে কোয়ান্টাম প্রভাবগুলো তুচ্ছ হয়ে যায়। তবে এই বিজ্ঞানীদের গবেষণা দেখিয়েছে, তুলনামূলক বড় সিস্টেমেও কোয়ান্টাম মেকানিক্সের নিয়ম প্রয়োগযোগ্য। তাদের এই আবিষ্কার পদার্থবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
১৯৮৪ ও ১৯৮৫ সালে জন ক্লার্ক, মিশেল দেভোরে ও জন মার্টিনিস সুপারকন্ডাক্টর দিয়ে তৈরি একটি বিশেষ বৈদ্যুতিক সার্কিটে একাধিক পরীক্ষা চালান। সার্কিটে দুটি সুপারকন্ডাক্টরকে আলাদা করে রাখা হয়েছিল একটি পাতলা অপরিবাহী স্তর দিয়ে, যা ‘জোসেফসন জাংশন’ নামে পরিচিত। সেখানে ইলেকট্রনগুলোর সম্মিলিত আচরণ এমনভাবে দেখা যায়, যেন পুরো সিস্টেমটি একটি মাত্র কণার মতো কাজ করছে।
প্রথমে সিস্টেমটি ভোল্টেজবিহীন অবস্থায় কারেন্ট প্রবাহিত করে, যা এক প্রাচীরের পেছনে আটকে থাকার মতো। কিন্তু পরীক্ষায় দেখা যায়, এটি কোয়ান্টাম টানেলিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাচীর অতিক্রম করতে সক্ষম হয় এবং ভোল্টেজের উপস্থিতি তার পরিবর্তনের প্রমাণ দেয়। গবেষকরা দেখান, সার্কিটটি নির্দিষ্ট শক্তিস্তরে কাজ করে এবং কেবল নির্দিষ্ট পরিমাণ শক্তি শোষণ বা নির্গত করতে পারে যা কোয়ান্টাইজড এনার্জি লেভেলের স্বাক্ষর বহন করে।








