চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.৮ শতাংশে উন্নীত হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলছে, মূল্যস্ফীতির চাপ কমায় এবং সরকারি ভোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় জিডিপি প্রবৃদ্ধি খাত ইতিবাচক ধারায় ফিরছে। এছাড়া ২০২৭ সালে প্রবৃদ্ধি আরও বেড়ে ৬ দশমিক ৩ শতাংশে দাঁড়াবে বলে মনে করছে সংস্থাটি। তবে দেশের কর্মসংস্থান নিয়ে উদ্বেগ জানানোর পাশাপাশি এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন-পরবর্তী সময়ের জন্য এখনই প্রস্তুত হওয়ার কথা বলেছে।
আজ মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ অফিসে আয়োজিত ‘দক্ষিণ এশিয়া ও বাংলাদেশ আপডেট’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিশ্বব্যাংক জানায়, ২০২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে মারাত্মক ব্যাঘাত সত্ত্বেও পরবর্তী প্রান্তিকগুলোতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে। বহিরাগত খাতের চাপ হ্রাস পেয়েছে, রিজার্ভ হ্রাস স্থিতিশীল হয়েছে এবং মুদ্রাস্ফীতির চাপ কমেছে।
তবে এ সময়ে দেশের অর্থনীতির জন্য উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে মনে করছে সংস্থাটি। বেসরকারি বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি তীব্রভাবে ধীর এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি স্থবির হয়ে পড়েছে। উচ্চ মাত্রার অনাদায়ী ঋণের কারণে ব্যাংকিং খাত এখনও ঝুঁকিপূর্ণ। দুর্বল রাজস্ব আদায়ও ।
বিশ্বব্যাংক বলছে, চলতি অর্থবছর নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল ছিল। তবে গণআন্দোলনের কারণে প্রথম প্রান্তিকে বড় ধাক্কা খেয়ে পুরো অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি সামান্য কমে ৪ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৪ দশমিক শূন্য শতাংশে নেমেছে।
এর পেছনে কারণ ছিল বিনিয়োগ স্থবিরতা, উচ্চ সুদের হার ও উৎপাদন ব্যয়ের বৃদ্ধি। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে আসে এবং মূলধনী পণ্যের আমদানি কমে যায়।
বেসরকারি বিনিয়োগ কমে যাওয়ার কারণ উল্লেখ করে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাটি বলছে, দুর্বল বিনিয়োগের কারণে প্রবৃদ্ধির মন্দা দেখা দিয়েছে, যা মাত্র শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং ব্যবসা পরিচালনার উচ্চ ব্যয়ের কারণে বেসরকারি বিনিয়োগ কম ছিল। তাছাড়া সরকারি বিনিয়োগও হ্রাস পেয়েছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির ব্যয় এবং মূলধনী পণ্যের আমদানি যথাক্রমে ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ১০ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে।
বিশ্বব্যাংক আরো জানিয়েছে, মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমলেও পুরো বছর ঊর্ধ্বগতি ছিল। তবে তৈরি পোশাক খাতের রফতানি প্রবৃদ্ধি জিডিপিতে বড় ভূমিকা রাখে। শিল্পখাতে সামান্য উন্নতি দেখা গেলেও নির্মাণ খাতে বড় পতন ঘটে। বন্যার ধকল কাটিয়ে কৃষিখাত বছরের শেষার্ধে ঘুরে দাঁড়ায়, কিন্তু বাণিজ্য, পরিবহন ও আবাসনের ধীরগতি সেবা খাতকে চাপে রাখে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ও ভুটান বিভাগের পরিচালক জ পেম, দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট, দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান অর্থনীতিবিদ ফ্রানজিস্কা ওনসর্গসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা।
সূত্র:যায়যায় দিন








