Home সারাদেশ মানিকগঞ্জে দুই সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যা

মানিকগঞ্জে দুই সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যা

18
0

মানিকগঞ্জের একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে দুই শিশু সহ এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুর দুইটার দিকে পশ্চিম বান্দুটিয়া এলাকার কবি মহিদুর রহমান সড়কের একটি বাসা থেকে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে দুই সন্তানসহ নারীর মরদেহ উদ্ধার করে।

পুলিশের ধারনা, দাম্পত্য কলহের জের ধরে দুই শিশু সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যা করে ওই নারী নিজেও অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইট (বিষ) খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। নিহত নারীর নাম শিখা আক্তার (২৭) তাঁর বড় ছেলে আরাফাত হোসেন আলভী (৭) ও ছোট মেয়ে সায়মা আক্তার (২)স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বাসার বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার জন্য দরজায় কড়া নাড়লে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হলে বাড়ি মালিককে খবর দেওয়া হয়। এরপর বাড়ির মালিক ঘটনাস্থলে এসে পুলিশের সেবা নম্বর ৯৯৯ ফোন দিলে পুলিশ দরজা ভেঙে রুমের খাটের উপর শিখা আক্তারের মরদেহ, আর খাটের নিচে ফ্লোরে সাত বছরের শিশু আরাফাত হোসেন আলভী ও দুই বছরের শিশু সায়মা আক্তারের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।

নিহত নারীর স্বামী শাহীনের মামা আমান আনসারী জানান, শাহীন দেওয়ান তাঁর ফুপাতো বোনের ছেলে। শাহীন দেশে থাকতে হ্যালোবাইক চালাতেন। গত একমাস আগে তিনি মালয়েশিয়া যান। নিহত নারী শিখা আক্তার ছিলেন শাহীনের দ্বিতীয় স্ত্রী। নিহতের দু সন্তানের মধ্যে পুত্র আলভী আগের ঘরের সন্তান আর মেয়ে সায়মা শাহীনের নিজের সন্তান বলে জানান তিনি। তবে কেন, কি কারনে শিখা আত্মহত্যা করলেন সেটা বলতে পারেননি তিনি।

একই ফ্ল্যাটের প্রতিবেশী আলমগীর হোসেন বলেন, আগষ্ট মাসের ১৫ তারিখে বাসাটি একাই ভাড়া নেন নিহত নারীর প্রবাসী স্বামী শাহীন দেওয়ান। একদিন থাকার পর তিনি মালয়েশিয়া চলে যান। বাসা ভাড়া নেয়ার পর শিখা আক্তার আসেনি। চলতি মাসের ১৫ তারিখ শিখা আক্তার বাসায় উঠেন। ভাড়াটিয়া হিসেবে কারো সাথে তেমন একটা সম্পর্ক ছিলোনা শিখার। স্বামীর সাথে কি নিয়ে বিরোধ চলছিল সে বিষয়ে প্রতিবেশী কিছু বলতে পারেনি।

এদিকে ভিডিও কলে নিহতের স্বামী শাহীন দেওয়ানের সঙ্গে কথা বলে সদর থানার তদন্ত কর্মকর্তা (এস আই) জিয়া উদ্দিন জানায়, গত পাঁচ বছর আগে শাহিনের সাথে শিখা আক্তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শাহীনের সাথে স্ত্রীর দাম্পত্যকলহ চলছিল। শাহীনের সাথে তার স্ত্রী শিখার মোবাইল ফোনে গতকাল মঙ্গলবার শেষ কথা হয়েছিল। ওই সময়ে তাদের দুজনের মধ্যে জগড়া হয়। এরপর শাহীন স্ত্রীর ফোনে একাধিকবার কল করলেও ফোনটি ধরেননি স্ত্রী শিখা আক্তার।

মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার মোসাম্মৎ ইয়াছমিন খাতুন বলেন, সরকারী সেবা নম্বর ৯৯৯ ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ঘরের দরজা ভেঙ্গে লাশ তিনজনের লাশ উদ্ধার করেন। ধারনা করা হচ্ছে, প্রবাসী শাহীনের সাথে স্ত্রীর শিখার দাম্পত্যকলহ চলছিল। এ কারনে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

সন্তানদের নিয়ে আত্মহত্যা করার কারন কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিহত শিখা আক্তার হয়ত মনে করেছেন তিনি আত্মহত্যা করলে সন্তানদের কি হবে? এ কারনে সন্তানদের অ্যালুমিনিয়াম ফসফাইট (বিষ) খাইয়ে নিজেও আত্মহত্যা করেছেন। নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা পক্রিয়াধীন আছে।

সূত্র :যায়যায় দিন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here