Home রাজনীতি বিক্ষোভ-অবরোধে অচল ফরিদপুরের মহাসড়ক, ৪০ কিলোমিটার যানজট

বিক্ষোভ-অবরোধে অচল ফরিদপুরের মহাসড়ক, ৪০ কিলোমিটার যানজট

3
0

ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন ফরিদপুর-২ আসনে যুক্ত করার প্রতিবাদে ভাঙ্গায় দিনব্যাপী মহাসড়ক অবরোধের কারণে ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে অন্তত ৪০ কিলোমিটার এলাকায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সড়

বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত যানজট ৪০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যায়। সকাল ৮টা থেকে ওই দুই মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে এলাকাবাসী।

অবরোধকারীরা ভাঙ্গার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন। তারা টায়ারে আগুন জ্বালান, বাঁশ ও কাঠ ফেলেন, এমনকি ঘুমানোর চৌকি ফেলে মহাসড়ক বন্ধ করে দেন। এ কারণে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বরইতলা পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার, পুকুরিয়া থেকে তালমা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার, আর ঢাকার দিকে বগাইল টোলপ্লাজা থেকে এক্সপ্রেসওয়ের পুলিয়া পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকায় যানজট তৈরি হয়।

ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

অন্যদিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ভাঙ্গা পৌরসভা থেকে জয়বাংলা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট দেখা যায়। সব মিলিয়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে যানজট ও যানবাহনের সাড়ি অন্তত ৪০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছাড়িয়ে যায়। আটকে পড়া যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। কেউ কেউ হেঁটে গন্তব্যের পথে রওনা দিয়েছেন।

 

 

ঢাকা থেকে খুলনার বাসে যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী সেলিম মোল্লা। তিনি বলেন, ভোরে রওনা দিয়েছিলাম, এখনো ভাঙ্গা পার হতে পারিনি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িতে বসে আছি। খাবার-পানি শেষ হয়ে গেছে। এমন ভোগান্তি সহ্য করা কষ্টকর।

গোপালগঞ্জের রোগী লাইলী বেগম চিকিৎসার জন্য ঢাকায় যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, আমার হাসপাতালে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল দুপুরে। কিন্তু সকাল থেকে ভাঙ্গায় আটকে আছি। গাড়ি নড়ছে না। শরীর খারাপ লাগছে, সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছানোর চিন্তাতো ছেড়েই দিছি। এখন বাড়িতে রাতের মধ্যে ফিরে যেতে পারব কিনা সেটাই ভাবতেছি।

 

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা জানান, আন্দোলনকারীরা একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন, যা নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে। এটা স্থানীয় সমস্যা নয়, জাতীয় সমস্যা। সমাধানও জাতীয় পর্যায়ে খুঁজে বের করতে হবে।

এদিকে ভাঙ্গা থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে মহাসড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বিপুলসংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণের কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। জরুরি কিছু যানবাহন ছাড়া সব ধরনের পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের গেজেট অনুযায়ী ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়নকে ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। যা স্থানীয়দের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। পরদিন ৫ সেপ্টেম্বর দুই দফায় ওই দুই মহাসড়কের অন্তত সাতটি পয়েন্টে অবরোধ করা হয় এবং তখন স্লোগান দেওয়া হয় ‘আমার মাটি আমার মা, নগরকান্দায় যাব না।’ পরে তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে সমাধানের জন্য গতকাল সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত সময় দিয়ে মহাসড়কের অবরোধ তুলে নেয় এলাকাবাসী। এর মধ্যে সমাধান না হওয়ায় আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) থেকে আবার ওই দুটি মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।

এছাড়াও আজ নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। বিএনপি নেতা মো. শহিদুল ইসলাম বাবুল ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান দুলালসহ ৫ জনের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিটটি করা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব।

সূত্র :যায়যায় দিন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here