বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এক বছর পেরিয়ে গেলেও গণমাধ্যমের ‘প্রত্যাশিত সংস্কার হয়নি’ বলে মনে করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, যিনি এক সময় অন্তর্বর্তী সরকারে তথ্য উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় স্বাক্ষ্য দেওয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ বুধবার বিকালে এ মামলায় তিনি স্বাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেন নাহিদ। বৃহস্পতিবার ১২টা ৪৫ মিনিটে তার সাক্ষ্য শেষ হয়। বুধবার সাক্ষ্য দেওয়ার সময় তিনি বলেছিলেন, আন্দোলনের এক পর্যায়ে তারা বুঝতে পেরেছিলেন যে, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াগুলো ‘সরকারের নিয়ন্ত্রণে’ চলে গেছে
বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জুলাই আন্দোলনের সামনের সারির নেতা নাহিদ বলেন, “আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে গণমাধ্যমের বিভিন্ন রোল ছিল। আমি ১৮/১৯ (২০২৪ সালের জুলাই) তারিখের কথাটা বলেছি।
বিভিন্ন সময় পত্রিকা বা বিভিন্ন কয়েকটি ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করেছিল; অনেক সাংবাদিকও। ফলে সেখানে ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেমন ছিল, আবার ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে অবস্থানও ছিল। কিন্তু মিডিয়ায় বিষয়ে যে প্রত্যাশা আমাদের ছিল, যদিও আমিও দায়িত্বে ছিলাম, সে অনুযায়ী কিন্তু মিডিয়া সংস্কার হয়নি এবং মিডিয়া এখনও নিয়ন্ত্রিত বলে আমি মনে করি। তিনি বলেন, ‘ডিজিএফআই আগে যেভাবে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করত, বিভিন্ন নিউজ প্রকাশ করত, এখনও সেই চর্চা রয়েছে। রাজনৈতিক দলের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
আমি যে সময়টুকু দায়িত্ব পেয়েছিলাম, আমি আমার পক্ষ থেকে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন করেছিলাম।’ সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, ‘যারা সংস্কার কমিশনে ছিলেন তাদের দায়িত্ব ছিল পুরো বিষয়টাকে সংস্কার প্রস্তাব করে সরকারের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করা।
যে মামলাগুলো হয়েছিল সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে, তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটি করা হয়েছিল মামলাগুলো পর্যালোচনা করার জন্য। আইন মন্ত্রণালয়ও সুপারিশ করেছিল, বাকিটা আইন মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছিল। যারা ফ্যাসিবাদেরে দোসর ছিল, যেসকল সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদেরও বিচারের আওতায় আনা…।’
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সময় নাহিদ ইসলাম তথ্য উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছিলেন। পরে পদত্যাগ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি গঠন করে তার আহ্বায়কের দায়িত্ব নেন। ট্রাইব্যুনালের এই মামলায় তিনি ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন।
সূত্র :যায়যায় দিন