দুই যুগ পুরোনো মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা সংস্কার করে নতুন খসড়া প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। প্রস্তাবিত মিউচুয়াল ফান্ড বিধিমালা ২০২৫ অনুযায়ী, ইউনিটহোল্ডারদের সিদ্ধান্তে বিদ্যমান মেয়াদি ফান্ড অবসায়ন বা বেমেয়াদি স্কিমে রূপান্তরের সুযোগ থাকবে। খসড়া প্রকাশের পর অংশীজনদের মতামত গ্রহণ শেষে এটি চূড়ান্ত করা হবে।
নতুন বিধিমালায় বিদ্যমান মেয়াদি ফান্ডের জন্য আলাদা অধ্যায় সংযোজন করা হয়েছে। প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, গেজেট প্রকাশের পর নতুন কোনো মেয়াদি স্কিম চালু করা যাবে না, কেবল বেমেয়াদি ফান্ড অনুমোদন দেওয়া হবে।
তবে বিদ্যমান মেয়াদি ফান্ডে ইউনিটহোল্ডারদের সুরক্ষার জন্য বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে। গেজেট প্রকাশের ছয় মাসের মধ্যে কোনো ফান্ডের ইউনিটপ্রতি গড় লেনদেনমূল্য ক্রয়মূল্য বা ঘোষিত নিট সম্পদমূল্যের (NAV) চেয়ে ২৫ শতাংশের বেশি কমে গেলে ট্রাস্টি বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) আহ্বান করতে পারবে। সেখানে উপস্থিত ভোটদাতা ইউনিটহোল্ডারদের অন্তত তিন-চতুর্থাংশ রূপান্তর বা অবসায়নের পক্ষে ভোট দিলে বিএসইসির অনুমোদন সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
মেয়াদি স্কিম বেমেয়াদি ফান্ডে রূপান্তরের জন্য কমিশনের নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। এ সময় ফান্ড-সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর (ট্রাস্টি, সম্পদ ব্যবস্থাপক ইত্যাদি) বহাল রাখা বা পরিবর্তন করার সিদ্ধান্তও সভায় গ্রহণ করতে হবে। অন্যদিকে, মেয়াদোত্তীর্ণ হলে বা বিশেষ কারণে কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে কোনো ফান্ড অবসায়ন করা যাবে।
বিনিয়োগনীতিতে বলা হয়েছে, মিউচুয়াল ফান্ড বা স্কিমের অর্থ শুধুমাত্র স্টক এক্সচেঞ্জের মূল বোর্ডে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা যাবে। এছাড়া আইপিও, আরপিও, রাইট শেয়ার এবং সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের সুযোগ থাকবে।
তবে এটিবি বা এসএমই প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করা যাবে না। বিনিয়োগের পর কোনো সিকিউরিটি যদি মূল বোর্ড থেকে তালিকাচ্যুত হয়, তাহলে ছয় মাসের মধ্যে সেই বিনিয়োগ প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি এ ক্যাটাগরির নিচে ক্রেডিট রেটিংপ্রাপ্ত বন্ড বা শরিয়াহভিত্তিক সিকিউরিটিজেও বিনিয়োগ নিষিদ্ধ থাকবে।
খসড়ায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, বিধিমালা লঙ্ঘন করলে বিএসইসি জরিমানা, নিবন্ধন স্থগিত বা বাতিল, নতুন স্কিম গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা, ট্রাস্টি ও সম্পদ ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ, এমনকি পুঁজিবাজার থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারবে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই খসড়া বিধিমালা কার্যকর হলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে এবং পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা তৈরি হবে।
সূত্র:যায়যায় দিন








